যুক্তরাষ্ট্র || মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাঁকবদল ?

প্রকাশিত: ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২২

যুক্তরাষ্ট্র || মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাঁকবদল ?

 

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। মার্কিন ভোটাররা এ দিন বেছে নেবেন, কোন দল দেশটির হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট নিয়ন্ত্রণ করবে। ভোট-পূর্ববর্তী জরিপে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের চেয়ে বিরোধী রিপাবলিকান দল এগিয়ে রয়েছে। মূলত মুদ্রাস্ম্ফীতি ও উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় জো বাইডেনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকের নির্বাচনে যদি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের নিয়ন্ত্রণ ডেমোক্র্যাটদের থেকে রিপাবলিকানদের হাতে যায়, তাহলে দেশটির জাতীয় রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।

 

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি ও সিনেটের ৩৫টি আসনে এবার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ছাড়া দেশটির ৩৯টি রাজ্যের গভর্নর বেছে নিতে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। তবে নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণের আগে মাথায় রাখতে হবে, ২০২০ সালের জনশুমারির পরে দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভোটের আসনের ভৌগোলিক সীমানায় পরিবর্তন এনেছিল, যা বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষে যায়।

নির্বাচনের প্রেক্ষাপট: আজকের নির্বাচন ডেমোক্র্যাটদের চিন্তার কারণ হতে পারে। কারণ, এত দিন দলটির হাতে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ছিল। তবে এ নির্বাচনে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে। এ ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক তথ্য হচ্ছে, এর আগে ক্ষমতাসীন তিন প্রেসিডেন্টের- ডোনাল্ড ট্রাম্প, বারাক ওবামা ও জর্জ ডব্লিউ বুশ- আমলে মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর কংগ্রেস ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণ বিরোধীদের হাতে চলে গিয়েছিল।যা হোক, আজকের নির্বাচনে অভিবাসন, অপরাধ ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় রিপাবলিকানদের ভোটে জয়ী করতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া গত ৬ জানুয়ারি দেশটির ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনায় কংগ্রেসনাল তদন্তও নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে।

যেমন হতে পারে অর্থনৈতিক নীতির দৃষ্টিভঙ্গি: মধ্যবর্তী নির্বাচনে যারাই জয়ী হোক না কেন, এটি অস্বীকার করার অবকাশ নেই যে কভিড-পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও অর্থনৈতিকভাবে কঠিন সময়ের মুখোমুখি। এ ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী আমদানি-রপ্তানি চেইনকে বাধাগ্রস্ত করছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পের সম্ভাবনা নষ্ট হচ্ছে। ত্বরান্বিত করছে মুদ্রাস্ম্ফীতি।

ভোট-পূর্ববর্তী জরিপে দেখা গেছে, অভিবাসন ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরাধ ও প্রজনন অধিকার সম্পর্কিত ঐতিহ্যগত উদ্বেগকেও ছাড়িয়ে গেছে অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেকারত্বের হার দ্রুত কমেছে দেশটিতে। তবে জীবনযাত্রার ব্যয় নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে।

নির্বাচনে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে জো বাইডেন বিভিন্ন নীতি বাস্তবায়নে রিপাবলিকানদের সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হবেন। এতে তাঁর অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে।

আরও যেসব ইস্যু ভূমিকা রাখবে: ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন নীতি, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা, বিচারের গুণমান, গণতন্ত্র ও অব্যাহত দলীয় সংঘাত এবারের নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। ইউক্রেনকে বিপুল অর্থ সহায়তার ব্যাপারে এরই মধ্যে দেশটিতে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, বাইডেন ইউক্রেনকে ব্লাঙ্ক চেক দিয়েছেন।

এরই মধ্যে অন্তত ৭৫ বিচারক নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছেন বাইডেন, যেটা সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ওবামার চেয়ে বেশি। তারপরও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেটের নিয়ন্ত্রণ হারালে ডেমোক্র্যাটদের এ অগ্রগতি বন্ধ হতে পারে। সর্বশেষ রিপাবলিকানদের হাতে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ গেলে তারা হোয়াইট হাউসের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করতে পারবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ