প্রকাশিত: ১০:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০২২
ছবি- সংগৃহীত
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ
ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে সংঘর্ষের পর ভারত সরকার আজ পার্লামেন্টে দাবি করেছে, চীন একতরফাভাবে সীমান্তের স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে চাইলেও সে চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে।
এর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সোমবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, গত ৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) তাওয়াং সেক্টরে দুদেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে কিছু ‘ছোটখাটো আঘাতে’র ঘটনা ঘটেছে।
চীনের পক্ষ থেকে তাওয়াংয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। খবর বিবিসির।
তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন আজ বলেছেন, ‘আমরা যতদূর জানি চীন-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বিকভাবে স্থিতিশীলই আছে।’ কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যানেলগুলোতে দুদেশের মধ্যে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা অবাধে চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং আজ দেশের পার্লামেন্টে উভয় কক্ষেই বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘চীনের সেনারা অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখন্ডের কিছু অংশ দখল করতে চাইলেও সে চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় সেনারা চীনা বাহিনীকে তাদের ছাউনি বা পোস্টে ফিরে যেতে বাধ্য করেছে।’ তবে সে দিনের সংঘর্ষে কোনও পক্ষের কোনও সেনা নিহত বা গুরুতরভাবে জখম হননি বলেও সরকার পার্লামেন্টে জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর পরই সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলে চীনের সঙ্গে কথাবার্তা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের প্রায় আড়াই বছর পর আবার দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে বড়সড় কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।
তবে পূর্ব সীমান্তের তাওয়াং-য়ের এই ঘটনায় দু’পক্ষের ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
ভারতের অরুণাচল প্রদেশ থেকে নির্বাচিত শাসক দল বিজেপি-র এমপি তাপির গাও ব্রিটেনের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাকে জানিয়েছেন, সংঘর্ষে কুড়িজন ভারতীয় সেনা আহত হয়েছেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন– যার মধ্যে অন্তত ছ’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য পার্লামেন্টে ভারত সরকারের করা দাবি মিলছে না, যেখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন কারও আঘাতই তেমন গুরুতর নয়।
ভারতের পার্লামেন্টে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি অবশ্য দেশের বিরোধী দলগুলোকে আজ সন্তুষ্ট করতে পারেনি। ভারত-চীন সীমান্ত ইস্যুতে সভায় বিশদ আলোচনা চেয়ে তারা পার্লামেন্ট থেকে আজ ওয়াক-আউটও করেছেন।
বিরোধী আরজেডি-র এমপি মনোজ ঝা দাবি করেছেন, চীন নিয়ে সরকার ‘ডিনায়াল মোডে’র কূটনীতি করছে– অর্থাৎ আসলে সীমান্তে যা ঘটছে, সেই বাস্তবতাকে তারা অস্বীকার করতে চাইছে।
হায়দ্রাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করেছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরকার অসত্য ভাষণ করছে – এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চীনের নাম উচ্চারণ করারও সাহস দেখাতে পারছেন না।
ভারত-মার্কিন যৌথ মহড়ার প্রভাব?
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা লিখেছে, চীন সীমান্তের কাছে গত মাসে ভারত ও মার্কিন বিমানবাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়ার পর থেকেই কূটনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছিল।
তারা জানাচ্ছে, ‘যুদ্ধ অভ্যাস’ নামে এই সামরিক মহড়া যদিও প্রতি বছরই হওয়ার কথা – কিন্তু এবছর যেহেতু সেটি চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ৬৫ মাইল দূরে অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে জোর দেওয়া হয় ‘মাউন্টেন ওয়ারফেয়ার’ বা পার্বত্য যুদ্ধে – চীন সেই পদক্ষেপকে খুব ভালো চোখে দেখেনি।
এই যৌথ মহড়া চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত অঞ্চলে পারস্পরিক আস্থার পরিপন্থী বলেও তখন বেজিং মন্তব্য করেছিল।
গত ২৯ নভেম্বর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বা পেন্টাগনের পক্ষ থেকে যে ‘চায়না মিলিটারি রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেও জানানো হয়েছে চীন-ভারত সম্পর্কের ভেতরে আমেরিকা যাতে হস্তক্ষেপ না-করে, সেজন্যও চীন মার্কিন কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত আছে, অরুণাচল প্রদেশে সীমান্ত সংঘর্ষের সঙ্গে এই ভারত-মার্কিন যৌথ মহড়ার সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: হারুন মিয়া
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest