আমরা জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চাই – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান

প্রকাশিত: ৭:০১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২৩

আমরা জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চাই – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান

 

সিলেট থেকে সংবাদদাতাঃ

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশে বার বার গণতান্ত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে। এখনো দেশ গভীর সংকটে রয়েছে। আর এই সংকট তৈরি করেছে বিনা ভোটের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতা দখল করে থাকা এই সরকার। অতীতে যখনই দেশে গণতান্ত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে তখনই রাষ্ট্র কাঠামোকে মেরামত করে দেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তোরনের জন্য বিএনপি ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি ও রাষ্ট্র কাঠামোকে মেরামত করার জন্য ২৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আমরা এই কর্মসূচির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চাই, মানুষের ভোটের অধিকরকে ফিরে পেতে চাই, দেশে জনগনের সরকার প্রতিষ্টা করতে চাই। তাই এই আন্দোলনে দেশের সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জনগনের সরকার প্রতিষ্টা করতে হবে।

আজ ৭ ই ডিসেম্বর রোজ শনিবার নগরীর একটি অভিজাত হোটেলের হলরুমে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির চলমান গণতান্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি ও ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে’ ২৭ দফা নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী ও ব্যাখ্যামুলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

তিনি আরো বলেন, রক্তে স্বাধীন আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আজ গভীর সংকট। এই সংকট বিনাভোটে যারা ক্ষমতা আকড়ে রেখেছে তাদের তৈরি সংকট। একটি রাষ্ট্র টিকে থাকে তার জনগনের ঐক্যের উপর, জনগনের নির্বাচিত সরকারের কার্যক্রমের উপর। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার উপর। দুর্ভাগ্যক্রমে দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছু দিন পরই দেশে গণতান্ত্রিক সংকট দেখা দেয়, আজও তা বিদ্যমান। যখন কোন রাজনৈতিক দল মনে করে তারাই দেশের মালিক তখনই এমন সংকট তৈরি হয়। ১৯৭৫ এর ২৫শে জানুয়ারি দেশে সকল রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার সহ মানুষের কথা বলার অধিকারকে বিলুপ্ত করে দেশে একদলীয় শাষন ব্যবস্থা চালু হয়, বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের আওতায় নিয়ে আসা হয়, মাত্র ৪ টি পত্রিকা ছাড়া সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়। এসময় দেশে দুর্বিক্ষে বহু মানুষ মারা যায়। রাষ্ট্র এতবড় সংকটে সম্মূখিন আর কখনো হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তখন দেশবাসীকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। কিন্তু দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যা করা হয়। এর পর আবারো দেশে স্বৈরশাসন শুরু হয়। দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সংগ্রাম করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বার বার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, আর রাষ্ট্র কাঠামোকে মেরামতের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। কিন্তু বিএনপি কখনো গণতন্ত্রকে হত্যা করেনি, বরং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছে। মৃতপ্রায় আওয়ামীগকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল বিএনপি। বাংলাদেশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে সব দলকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত। এখানে বিভিন্ন ধর্মীয় ও মত-পথের রাজনৈতিক দল রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেই সুযোগ নেই। বিরোধী দল মতের মানুষ আজ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন না। এই সরকার শুধু গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে নি, মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেয়া হয়, প্রচারণায় বাঁধা দেয়া হয়, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নিজের ভোট অন্যজন দিয়ে দিয়েছে। গণতন্ত্রের বাহন নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আছে বলা যায় না। এজন্য বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। যা আমাদের জন্য চরম লজ্জার।

বিরোধী দলের উপর দমন নিপিড়নের বিষয়ে তিনি বলেন, কোন অভিযোগ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়াকে বছরের পর বছর বন্দি করে রাখা হয়েছে, অতচ যারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে বসে আছে। দেশের বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতি সরকারের পছন্দমত রায় না দেয়ায় শুধু পদত্যাগই নয় তাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। রাষ্ট্র কাঠামোর প্রত্যেকটি ভিত্তি বিপর্যস্ত করে দেয়া হয়েছে। দুদক এখন দুর্ণীতি দমন না করে বিএনপি দমন কমিশনে নিয়োজিত হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটি এখন দলীয় লোক নিয়োগ দেয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রকাটামো মেরামতের জন্য ২৭ দফা দেয়া হয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই সংকট থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তি সহ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জঅ আব্বাস সহ সকল রাজবন্দিদের অভিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ