বাংলা একাডেমির পুরস্কার পাচ্ছেন সুনামগঞ্জের “ধ্রুব এষ “

প্রকাশিত: ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩

বাংলা একাডেমির পুরস্কার পাচ্ছেন সুনামগঞ্জের “ধ্রুব এষ “

হুমায়ূন কবীর ফরীদি ##

সাহিত্যের বিভিন্ন ক্রেত্রে অবদান রাখায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরুষ্কার পাচ্ছেন সুনামগঞ্জের কৃতি “সন্তান ধ্রুব এষ”। তাঁর এ প্রাপ্তিতে সর্বত্র আনন্দের বন্যা বইছে।

সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান রাখায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরুষ্কার -২০২২ এর জন্য ১৫ জন গুনী ব্যাক্তি মনোনীত হয়েছেন। তমধ্যে হাওর কন্যা খ্যাত জ্ঞানী – গুনী, বাউল-গীতিকার, সাহিত্যক ও রাজনীতিবিদ এককথায় গুনীজনদের উর্বর ভূমি সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান “ধ্রুব এষ ” শিশুসাহিত্যে অফুরন্ত অবদান রাখায় এই পুরস্কার পাচ্ছেন বলে ২৫ শে জানুয়ারী বিকালে বাংলা একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সুত্রে জানা গেছে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক ভাবে  বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই পুরুষ্কার তাঁদের হাতে তুলে দেবেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এই প্রাপ্তিতে সুনামগঞ্জের সর্বমহলে আনন্দ বন্যা বইছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন ভাবে বাংলা একাডেমি সংশ্লিষ্ট সকল ও ধ্রুব এষ’কল আন্তরিক অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচছা জানাচ্ছেন সচেতন মহল। সুনামগঞ্জবাসীর প্রাণের স্পন্দন ধ্রুব এষ ১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিল পাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁর বাবা ভূপতি এষ ও মাতা লীলা এষ।

চারুকলা শিল্পী ধ্রুব এষ’কে মানুষ চেনেন একজন প্রচ্ছদ শিল্পী হিসেবে। বাংলাদেশ এর প্রচ্ছদ শিল্পে তাঁর ভূমিকা রীতিমতো অবিস্মরণীয় ঘটনা। এমন অনেকেই আছেন ধ্রুব এষ’কে নামে চেনেন, দেখেননি কখনো।

তিনি প্রচ্ছদের পাশা-পাশি লেখা-লেখি করেন। সাহিত্যিক হিসাবেও ধ্রুব এষ এর রয়েছে আলাদা খ্যাতী।সব বিষয়ের লেখাতেই সিদ্ধহস্ত। ছোট-বড় সব বয়সী পাঠক তাঁর লেখায় আকৃষ্ট হন সমানভাবে।বিশেষ করে ছোটদের জন্য তাঁর লেখা ছড়া,কবিতা, ছোট গল্প ও সায়েন্স পিকশন আলাদা ভাবে মূল্যবান। ধ্রুব এষ এর লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫০ অতিক্রম করেছে।তাঁর লেখনীতে দেখা -না-দেখা জীবন এর সম্মিলন ঘটে। যেখানে অনুভব করা যায় পাওয়া না পাওয়াকে।জীবনের বহুবর্নিল বাস্তবতাকে নতুন মোড়কে উপস্থাপন করেন তিনি। আকাঁ-লেখা উভয় জায়গাতেই তিনি স্বাতন্ত্র্য আর অসাধারণত্ব বজায় রেখে অন্যন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন।

জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর জনপ্রিয় বইগুলোর অধিকাংশ প্রচ্ছদ একেঁছেন ধ্রুব এষ।অসংখ্য প্রচ্ছদের ভীড়ে পাঠকের চিনে নিতে ভূল হয়না ধ্রুব এষ এর নিপুণ হাতের কাজগুলো। এযাবৎ প্রায় একুশ হাজার প্রচ্ছদ একেঁছেন। চারুশিল্পী হিসেবে তাঁর আবির্ভাব ১৯৯০ দশকের মধ্যভাগে।বিমূর্ত নকশার প্রতি তাঁর ঝোক ছিল বেশী।বিগত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের প্রচ্ছদ শিল্পে একচ্ছত্র অধিপতি তিনি।

যারা এবার পুরুষ্কার পেয়েছেন তাঁরা হলেন, কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ /গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক,বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান /কল্পবিজ্ঞান / পরিবেশ বিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, আত্মজীবনী / স্মৃতি কথা / ভ্রমণকাহিনীতে ইকতিয়ার চৌধুরী ও ফোকলোরে পুরুষ্কার পেয়েছেন  ভ্রমণকাহিনিতে ইকতিয়ার চৌধুরী এবং ফোকলোরে পুরস্কার পেয়েছেন আব্দুল খালেক ও মুহম্মদ আব্দুল জলিল।

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সাল থেকে বাংলা সাহিত্যের ১০ টি শাখাশ পুরুষ্কার প্রদান করে আসছে বাংলা একাডেমি। প্রতিটি পুরস্কার এর মূল্যমান তিন লাখ টাকা। পুরস্কার প্রাপ্তদের সম্মাননা পত্র ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সমসাময়িক জীবিত লেখকদের সামগ্রিক মৌলিক অবদান চিহ্নিত করে তাঁদের সৃজনশীল প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করাই বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরুষ্কার প্রদান এর উদ্দেশ্য।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ