যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের মামলার শুনানিতে কি হয়েছিল?

প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের মামলার শুনানিতে কি হয়েছিল?

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৪ ঠা এপ্রিল রোজ  মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ম্যানহাটনে আদালত কক্ষে একজন অভিযুক্ত হিসেবে প্রবেশ করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় তার চারপাশে ছিলেন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। এর আগে তিনি ম্যানহাটনের আদালতে হাজির হলে নিয়ম অনুযায়ী আঙুলের ছাপ ও ছবি নেওয়া হয়। যার মাধ্যমে তাকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আদালতে প্রবেশ এবং আদালত থেকে বের হওয়ার সময় কোনো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি অভিব্যক্তি বা শারীরিক ভাষার মাধ্যমেও কিছু প্রকাশ করেননি।

সাবেক প্রেসিডেন্টের আসনের সরাসরি পাঁচ সারি পেছনে বসেছিলেন বিবিসির সংবাদদাতা কাইলা ইপস্টেইন। পুলিশের একটি দল সেখানে নজরদারি করছিল। আদালতে সাংবাদিকদের ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করতেও নিষেধ করা হয়েছিল।

আদালতের সম্পূর্ণ মুহূর্ত বর্ণনা করেছেন বিবিসির সংবাদদাতা কাইলা ইপস্টেইন। তিনি বলেন, যখন বিচারক জুয়ান মার্চান আদালতে আসেন, তখন মিট্রাম্পসহ সবাই উঠে দাঁড়ান। বিচারক মার্চান ঠান্ডা সুরেই আদালত পরিচালনা করছিলেন। এমনকি তিনি আওয়াজও বাড়াননি।

শুনানির সময় বেশিরভাগ সময় জুড়ে আইনজীবীদের সময়সীমা এবং আদালতের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এই মামলার তাৎপর্য আদালত কক্ষে উপস্থিত কারও বুঝতে ভুল হয়নি।

বিচারক ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগ পড়ে শুনালে, ট্রাম্প বলেন ‘নট গিল্টি’।

এরপর একপর্যায়ে বিচারক মার্চান সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আদালতের সব প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অধিকার আছে, তিনি সেটা বুঝতে পারছেন কিনা? ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যা’।

এরপর বিচারক বলেন, অন্য যেকোনো অভিযুক্তের মতো তিনি যদি আদালতে অবাধ্য বা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী আচরণ করেন, তাহলে তিনি বিচার প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অধিকার হারাতে পারেন।

যখন আইনজীবীরা যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন, প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যমে হুমকিমূলক পোস্ট করেছিলেন যার মধ্যে একটিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে সম্ভাব্য ‘মৃত্যু এবং ধ্বংস’ সম্পর্কে হুমকি দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেন, তাদের মক্কেল এই মামলায় হতাশ এবং বিরক্ত ছিলেন। যা তিনি অবিচার বলে মনে করেন।

তবে বিচারক বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বলেন, ‘আমি আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত নই। হতাশাকে বিদ্বেষমূলক বা বাজে ভাষা ব্যবহারের যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। ’

বিচারক মার্চান বলেন, এ ধরনের বক্তৃতা না দেওয়ার বিষয়ে তার সতর্ক করে দেওয়ার বিষয়টি কোনো আদেশ নয়, বরং অনুরোধ ছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে এরকম ঘটলে তিনি বিষয়টিকে ‘ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ’ করতে বাধ্য হবেন।

প্রায় এক ঘণ্টা পর শুনানি শেষ করেন বিচারক।এরপর ট্রাম্প উঠে দাঁড়ালে সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা তাকে ঘিরে ধরেন। আইনজীবীদের সঙ্গে শান্তভাবে ট্রাম্প কথা বলেন।

এরপর তিনি ঘুরে আদালতের মধ্যে প্যাসেজে চলে যান এবং পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান।

বাইরে অসংখ্য টেলিভিশন ক্যামেরা দাঁড়িয়ে থাকলেও তিনি কিছু বলেননি। তার অভিব্যক্তি ছিল বেশ গম্ভীর।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ