হুমায়ূন কবীর ফরীদি ##
জগন্নাথপুরে চারা ক্ষেত হতে উদ্ধারকৃত আগুনে পোড়া অজ্ঞাতনামা নারীর পরিচয় পেয়েছে থানা পুলিশ। এই ঘটনায় এই নারীর মেয়ে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
থানা সুত্রে জানাযায়, ১৭ ই জানুয়ারী রোজ বুধবার সকাল ১০ ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরে অবস্থিত ইকড়ছই জামেয়া ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার পিছনে ( দক্ষিণ পার্শ্বে) চারা ক্ষেতে প্রায় ৫৩ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা এক নারীর আগুনে অর্ধ পোড়া লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করার পাশা-পাশি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন। পরে সিআইডি ও পিবিআই এর বিশেজ্ঞ দল এই মরদেহের আঙুল এর চাপ সংগ্রহ করে জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে ছবি ও ঠিকানা পান। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মাতারগাঁও গ্রামের চন্দন মিয়ার স্ত্রী পিয়ারা বেগম ওরফে রিনা (৫৩)। নাম ঠিকানা জানার পর থেকে এই নারীর সন্ধানে অভিযান চালায় পুলিশ। ১৮ ই জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার রাতে দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামে এই নারীর মেয়ে সুভা বেগম এর সন্ধান পায় পুলিশ। এবং ১৯ শে জানুয়ারী রোজ শুক্রবার এই নারীর মেয়ে সুভা বেগম বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী সুভা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ৩০ বছর আগে আমার বাবার সাথে আমার মা পিয়ারা বেগম ওরফে রিনার বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি চন্দন মিয়াকে বিয়ে করেন। ৫ বছর আগে আবার চন্দন মিয়ার সাথে তাহার বিচ্ছেদ ঘটে। এর পর থেকে তিনি আমার বাড়ীতে (আমার স্বামীর বাড়ী)থাকতেন। এক মাস আগে তিনি আমার খালার বাড়ী দিরাই উপজেলার রায়বাঙ্গালী গ্রামে যান। সেখান থেকে গত ১৬ ই জানুয়ারী ছাতক উপজেলার শ্রীপতিপুর যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন।পরে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মর্গে গিয়ে মায়ের আগুনে পোড়া মরদেহ দেখতে পাই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার মাকে খুন করা হয়েছে। তবে কেবা কারা খুন করেছে জানিনা।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এই নারীর দুটি বিয়ে হয়। দ্বিতীয় স্বামী চন্দন মিয়ার সঙ্গেও অনেক দিন ধরে সম্পর্ক নেই। ময়নাতদন্ত শেষে এই নারীর পরিচয় জানার পর মরদেহ তার মেয়ের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় তার মেয়ে সুভা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) এএসপি শুভাশীষ ধর দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকাকে বলেন, আগুনে পোড়া এই নারীর মরদেহ পাওয়ার পর থেকে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। প্রথমে পরিচয় জানা না গেলেও আঙ্গুলের চাপ এর মাধ্যমে তার পরিচয় পত্র সংগ্রহ করার মাধ্যমে পরিচয় জানা গেছে। পরিচয় সনাক্তের পর তার স্বজনদের খোঁজে পাওয়া গেছে। তিনি যেখানে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে যাননি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই এর পাশা-পাশি মরদেহ জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় কিভাবে আসলো জানার চেষ্টা চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পরিচয় সনাক্তের পর এখন এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। আশাবাদী অতিশ্রীঘ্রই আমরা রহস্য উদঘাটন করতে পারব।