হুমায়ূন কবীর ফরীদি ##
বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট প্রকাশের এক বছর অতিবাহিত হলেও জগন্নাথপুর এর এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সম্মানী ভাতা পাচ্ছে না। এতে করে এই পরিবার এর সন্তান আব্দুল মুকিত এর হৃদয়ে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
প্রশাসন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সুত্রে জানাযায়, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে রণাঙ্গনের অকুতোভয় দুঃসাহসী যোদ্ধা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ১ নং কলকলিয়া ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত মোল্লারগাঁও গ্রাম নিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান ২০১৩ সালে মৃত্যু বরন করেন। তৎসময়ে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভূক্ত না হলেও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর পরিপেক্ষিতে রাস্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হয়। এরপর তাঁহার স্ত্রী আনোয়ার বেগম ২০১৯ সালের জুন মাসের ২৪ তারিখ জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্বামী আব্দুল হান্নানকে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তালিকাভূক্ত করার আবেদন করেন। এই আবেদন এর পরিপ্রেক্ষিতে বিগত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৮ ই জানুয়ারী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান এর নাম গেজেট ভূক্ত হয় ( গেজেট নং-৪৯৪৭)। ২০২০ সালে আনোয়ারা বেগম মৃত্যুবরন করার পর ছেলে মুকিত মিয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রদান সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেন। কিন্তু আজ অবদি মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পাননি। বিধায় এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে একান্ত আলাপকালে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান এর একমাত্র সন্তান মুকিত মিয়া আবেগ জড়িত কন্ঠে গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশে আমার বাবা জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীনে ভূমিকা রেখে গেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাবার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাবা -মা দেখে যেতে পারলেন না। অনেক দৌড়ঝাঁপ এর পর গেজেট হলেও এক বছর ধরে সম্মানী ভাতা পাচ্ছি না। ভাতা পেতে সোনালী ব্যাংকে ঘুরতে ঘুরতে এখন ক্লান্ত ও হতাশ। এবিষয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা রসরাজ বৈদ্য বলেন, ৭১ রণাঙ্গনের অকুতোভয় বীর সেনানী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান। তাঁর গেজেট হয়েছে। সম্মানী ভাতা আজ অবদি তাঁহার সন্তান পাচ্ছে না এটা শুনে হৃদয়ে ক্ষষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোরদাবী জানাচ্ছি।
এবিষয়ে সোনালী ব্যাংক জগন্নাথপুর শাখা ব্যবস্থাপক ওয়ালিদ আহমদ বলেন, ব্যাংক এর দাপ্তরিক কাজে ব্যবস্ততার কারনে এই বিষয়ে ফাইল প্রস্তুতি কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। অচিরেই বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করব।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান এর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট প্রকাশ এর পর আমরা সম্মানী ভাতার জন্য সোনালী ব্যাংকে কাগজপত্র পাঠিয়েছি। ভাতা পেতে কেন বিলম্ব হচ্ছে, খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
