প্রকাশিত: ৮:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
ছবি সংগৃহীত
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ
বহুল আলোচিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাসহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মোট ৪০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে আরও ৪২টি মামলায় তার জামিন পাওয়া এখনো বাকি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলছে না। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, দেশে নির্বাচনি আবহ তৈরি হলেই তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। ওই সময় দলের নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশ নেবেন তিনি।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হলেই তিনি দেশে আসবেন। এ জন্য মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনি পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছেন তার আইনজীবীরা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস খবরের কাগজকে বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক রহমান খালাস পেয়েছেন। তার দেশে আসতে আর কোনো বাধা নেই। শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। উনি (তারেক রহমান) সময়মতোই দেশে চলে আসবেন। দেশবাসী তার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘তারেক রহমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সে জন্য তার বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা রয়েছে সেগুলো আইনিভাবেই মোকাবিলা করতে চাইছেন। আইনিভাবেই তিনি মুক্ত হতে চান। তবে কবে দেশে ফিরবেন, সে বিষয়ে আগাম কিছুই বলা যাবে না।’
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, আইনি সব বাধা কাটিয়ে দেশে ফিরতে মামলার বিষয়ে দ্রুতই আপিল করা হবে। কারণ একের পর পর এক মামলায় অব্যাহতি পাওয়ায় দৃশ্যত তারেকের দেশে ফেরার সময় এগিয়ে আসছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন লন্ডনে রয়েছেন। সেখানে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। তারপর তারেকের দেশে ফেরার দিনক্ষণ জানা যেতে পারে।
বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীদের দেওয়া তথ্যমতে, গত ১৭ বছরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতি, মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮২টি মামলা হয়েছে। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৪০টি মামলায় খালাস কিংবা অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। কিছু মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। সর্বশেষ গতকাল সোমবার গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় তারেক রহমানসহ ৬০ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এর আগের দিন রবিবার ২১ আগস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাস পেয়েছেন তিনি। এখনো তার বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা বহাল রয়েছে। এসব রাজনৈতিক মামলা দ্রুতই নিষ্পত্তির জন্য ইতোমধ্যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিছু মামলার শুনানিও চলছে। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যেই তিনি মুক্ত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীরা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এখনো চারটি মামলায় সাজা পরোয়ানা রয়েছে। সেগুলো হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছর, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় ৯ বছর, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের মামলায় ৭ বছর এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মানহানির একটি মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ড রয়েছে। প্রতিটি মামলাতেই তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলা নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।
এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার বিষয়টি উল্লেখ করে তারা বলেন, এ ধারায় সরকারের নির্বাহী আদেশে আপিল কিংবা অন্য শর্তে সাজা মওকুফের বিধান রয়েছে। আপাতত এই আইনি প্রক্রিয়াটি তাদের চিন্তাভাবনায় রয়েছে। যেসব মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, সেগুলোতে আপিল করে আইনি মোকাবিলা করবেন।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘তারেক রহমানের বাকি মামলাগুলো আইনি মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এখনো ৪২টি মামলা নিষ্পত্তির বাকি রয়েছে। যথাসময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবেন।’
তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত চার মামলায় আপিলের জন্য কোনো আবেদন জমা দেননি বলে জানিয়েছেন আরেক আইনজীবী বিএনপির সহ-আইন সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খালাস পেয়েছেন। এই চারটি রাজনৈতিক মামলা সেই তুলনায় হালকা। তিনি নিয়ম অনুযায়ী মামলার আইনি মোকাবিলা করবেন। ৪০১ ধারায় যেকোনো জায়গা থেকেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। সেই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তিনি দেশে ফিরে আসবেন।’
দলীয় সূত্রমতে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর রাজনীতিতে বিএনপির জোয়ার বইছে। তারেক রহমানের জোয়ার বইছে। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবে দেশে ফিরবেন সেই সিদ্ধান্ত একমাত্র তিনিই নেবেন। আবার তারেক রহমান যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন। তাই সুনির্দিষ্ট কোনো মাস বা দিনক্ষণ বলা খুবই মুশকিল।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দলের শীর্ষ নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিনটি স্মরণীয় করে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেন্দ্র থেকে তৃণমূল ও মাঠপর্যায়ের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে দেশে আসতে পারেন- এমনটা ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। দেশে ফেরা উপলক্ষে রাজধানীতে শোডাউন ও মহাসমাবেশ করার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন তারেক রহমান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বাসভবন পর্যন্ত লাখো নেতা-কর্মী ও সমর্থক স্বাগত জানাবেন। সারা দেশ থেকে আসা লাখো জনতার ঢল নামবে ঢাকা মহানগরে।
জানা যায়, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে ফেরার পথ উন্মুক্ত থাকলেও ফেরেননি দলের এ কাণ্ডারী। এরই মধ্যে মুক্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একের পর এক রাজনৈতিক মামলা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফিরছেন না তারেক রহমান
নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, চলতি মাসের মাঝামাঝি বিদেশ যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তার লন্ডনে যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমে লন্ডনে এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে তার। এ ছাড়া সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করবেন খালেদা জিয়া। সব মিলিয়ে প্রায় এক মাস বিদেশে অবস্থান করবেন বেগম জিয়া। তবে খালেদা জিয়ার এবারের বিদেশযাত্রা শেষে তার সঙ্গে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দুই-তিনটি দেশে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হতে পারে। সে জন্য দেশ ছাড়ার আগে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: হারুন মিয়া
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest