স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত: ১২:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত নেতাদের বৈঠক

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির দাবি নিয়ে এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যান হেফাজতের শীর্ষ নেতারা।এতে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ইয়াহইয়াসহ সংগঠনটির ছয়জন সিনিয়র সদস্য অংশ নেন।

সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরকারের টানাপড়েন কমিয়ে আনা ও কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমীর মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা ইয়াহইয়া,  অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান (দেওনার পীর), হেফাজত মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রীস ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, আমাদের যেসব নেতাকর্মী এখনও কারাগারে রয়েছেন আমরা তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছি।লিখিতভাবে আমরা দাবিগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছি। তিনি বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তির ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলাদাভাবে আমরা কারও ব্যাপারে কথা বলিনি। যারাই জেলে রয়েছেন সবার মুক্তি আবেদনই আমরা জানিয়েছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, আজকের এ বৈঠকের মাধ্যমে হেফাজত নেতাদের মুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের তরফে বেশকিছু শর্তারোপ করা হয়েছে। হেফাজত নেতারাও সেগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, আমরা লিখিতভাবে নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছি। এছাড়া কারাগারে স্বজনদের সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন বিষয়ে মৌখিকভাবে কথা হয়েছে। বৈঠকের সব কথা আমি বিস্তারিত বলতে পারব না। মহাসচিব বিস্তারিত বলতে পারবেন।

হেফাজতের পক্ষ  থেকে বলা হয়েছে, বৈঠকে হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে ২০১৩, ২০১৬ ও ২০২১ সালের সকল মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ওলামায়ে কেরামদের মুক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। একইসঙ্গে তিনি কারাবন্দিদের সঙ্গে পরিবারের লোকজনের সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর কেন্দ্র করে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত সহিংসতার মামলায় সারাদেশে টানা গ্রেফতার অভিযানসহ নানামুখী চাপে পড়ে হেফাজত।

এসব মামলায় হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় ৩০ নেতাসহ সারাদেশে এক হাজার ২৩০ জনেরও অধিক গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই মামলাগুলোর তদন্ত করছে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই।

এরমধ্যে হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ জনতার হাতে ধরা পড়েন। এতে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়ে হেফাজত। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা শুরু থেকেই সমঝোতার চেষ্টা করছেন।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ‘হেফাজত তাণ্ডব’র ঘটনায় চলতি বছর ১৬৫টি মামলা হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয় হেফাজতে ইসলামের চার হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। তাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই হাজারের বেশি। এদের মধ্যে জামিন নিয়েছেন প্রায় এক হাজার ৩০০ আসামি। এই মুহূর্তে কারাগারে আছেন প্রায় ৬০০ জন। বাকি দুই হাজার আসামি জামিন নেননি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ