রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠানোর আগে প্রকাশের দাবি ডা. জাফরুল্লাহর

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২

রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠানোর আগে প্রকাশের দাবি ডা. জাফরুল্লাহর

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি যে দশ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করবে তা তিন দিন আগে জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

আজ শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ‘কাশ্মীর ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান। ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে.এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, ব্যারিস্টার মেজর (অব.) সরোয়ার, ভাসানী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উইং জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুসহ প্রমুখ।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমিও সার্চ কমিটির মিটিংয়ে গিয়েছিলাম। যে দশ জনের নাম প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠাবেন তা আগেই জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। জনগণকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দিতে হবে। সার্চ কমিটি যতই সার্চ করুক জনগণের চেয়ে বেশি সার্চ তারা করতে পারবে না। জনগণ হলো আসল সার্চের মালিক। তিন দিন আগে এই দশ জনের নাম প্রকাশ করা হলে তাদের সম্পর্কে আমরা সকল তথ্য দিতে পারব। গোয়েন্দা বাহিনী যে তথ্য দিতে পারে না, জনগণ সে তথ্য দিতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘কিছু হলেই বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। বঙ্গবন্ধুর কথা শুনি না, কিন্তু তাকে পূজা করি। বাংলাদেশ কর্তৃত্ববাদী শাসকের পরিবর্তে ন্যায়ভিত্তিক, আদর্শভিত্তিক, জনগণের কল্যাণভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাহলে প্রথম কাজ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘র’ এবং মোসাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’

ডিজিটাল সিকিউরিটির আইনের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না- দাবি করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল আইনকে ধ্বংস করতে হবে। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসতে চায় তাহলে সবাইকে নিয়ে আন্দোলনে যেতে হবে এবং পরিষ্কারভাবে বলতে হবে যে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন কবরে পাঠানো হবে। পরিষ্কারভাবে বলতে হবে- র‍্যাবকে বিলোপ করা হবে।

খালেদা জিয়ার ‘দুই ভুলের’ কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্লিন হার্ট অপারেশন করে তিনি ভুল করেছিলেন। আরেকটা ভুল করেছিলেন, সালমানের কথা শুনে ওষুধের দাম উঠিয়ে।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সার্চ কমিটির কাছে আমি আটজনের নাম বলেছিলাম। আমি কাউকে জিজ্ঞেস করে নাম দেই নাই। হঠাৎ হানিফ আবিষ্কার করলেন- এটা বিএনপির দেওয়া নাম। এই মিথ্যাচার কেন করলেন? এই ভুল তথ্য কেন দিলেন? এটা আমি জানি না। আমার সাথে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কারও সাথে গত তিন মাসে কথাও হয়নি, আলাপ দূরের কথা। হানিফ আরেকটা ভুল কথা বলেছেন। বলেছেন- আমি খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। আমি কোনোদিন বিএনপির সদস্য ছিলাম না, উপদেষ্টাও ছিলাম না।’

তিনি বলেন, ‘আধিপত্যবাদী ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের স্বোচ্চার হতে হবে। ‘র’কে বের করতে হবে। ‘র’ এর অফিস হলো প্রধানমন্ত্রীর অফিস। এটা কেমন কথা। এটা তো আমার দেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজের জন্যও ক্ষতিকর। প্রথমবার তিনি (শেখ হাসিনা) যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন নিয়ম ছিল সপ্তাহে একদিন যে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে পারবে। কিন্তু এখন তিনি সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা দলের কারো সাথেও দেখা করেন না। অন্তরীণ হয়ে আছেন তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ আরো বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করে শেখ হাসিনা ইতিহাসের অংশ হতে পারেন। আপনি ভয় পাবেন না। আপনার কিছু হবে না। শুধু একটা মামলা হবে, সেটা হলো অপচয়ের। আমি জানি না আপনি কোনো দুর্নীতি করেছেন কিনা। তবে এতটুকু বলবো, খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, সেটা আপনার সঙ্গে হবে না। যদি হয়, তাহলে আমি আপনার পাশেই দাঁড়াবো।’

পাকিস্তানে নিয়োজিত সাবেক উপরাষ্ট্রদূত সাকিব আলী বলেন, কাশ্মীর একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। রাজনৈতিকভাবেও এটা গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৪৭ থেকেই এটা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বেশ কিছু যুদ্ধ হয়েছে। ‘৮৯ সাল থেকে এই জায়গাটাতে সশস্ত্রীকরণ করা হয়। লস্কর-ই-তইয়েবাসহ বেশ কিছু সশস্ত্র সংগঠন গড়ে উঠেছে। কাশ্মীরের মধ্যে যে শয়তানি অশুভত্ব আছে, সেটা নানা জায়গাতেই আছে। এক সম্প্রদায়কে আরেক সম্প্রদায়ের পেছনে লাগিয়ে দিয়ে নিজেদের আখের গোছানো হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি নিয়ে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় আমরা দেখছি দুই ভাইয়ের শাসন। জনগণের ভোটেই তারা ক্ষমতায় এসেছিল, কিন্তু তারপর হয়ে গেছে অটোক্র‍্যাট। কখনো ভারতের সঙ্গে আপোষ করছে, কখনো চীনের সঙ্গে আপোষ করছে। নেপাল, ভুটানসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই একইভাবে চলছে। দক্ষিণ এশিয়ার এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত সার্ককে কার্যকর করা উচিত।’

ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন বলেন, কাশ্মীর সমস্যার দুটি মাত্র সমাধান। একটা যুদ্ধ। এটা নেতিবাচক। আরেকটা হলো গণভোট। এটা ইতিবাচক একটা সমাধান। কিন্তু ভারত কখনো সেটা হতে দেবে না। ভারতের ‘র’ বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোথাও আর সফল হয় নাই। আর বাংলাদেশে গুম হয়ে যাওয়ার ভয়ে কেউ ‘র’ নিয়ে কথা বলে না।

সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, সমস্যাটা হলো দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি। এজন্যই ৮৪ বার এটা তারিখ পেছায়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ