প্রকাশিত: ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এর অংশ হিসাবে সাবেক ছাত্রনেতা ও তরুণদের গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। তাদের মূল দলসহ অঙ্গ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের পদ দেওয়া হয়েছে। দলটির নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে তারুণ্যনির্ভর দল গঠনের কথা বলেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কেননা অতীতের সব আন্দোলনে তরুণ-যুবকদের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। আগামীতেও যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম সফল করতে হলে তরুণদের সামনে আনার বিকল্প নেই।
নেতারা জানান, জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রদলের প্রায় শতাধিক সাবেক নেতাকে পদায়ন করা হয়েছিল। এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে পদহীন ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ৯০-এর দশকে ছাত্রদলের যেসব সাহসী নেতা দীর্ঘসময় ধরে পদহীন তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক, সহ-সম্পাদকসহ নির্বাহী কমিটির অন্তত অর্ধশতাধিক পদ শূন্য রয়েছে। এসব শূন্য পদে সাবেক ছাত্র নেতাদের রাখতে চায় হাইকমান্ড। এজন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করতে বিএনপির দুজন সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। এছাড়া সাংগঠনিক জেলা ও এর অধীনে থাকা ইউনিটগুলোতেও পরীক্ষিত ছাত্রনেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।
এদিকে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে শিগগিরই নতুন কমিটি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেখানেও সাবেক ছাত্রদল নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ত্যাগী ও পরীক্ষিত সাবেক ছাত্র নেতাদের একটি তালিকাও বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগান্তরকে বলেন, দেশের মানুষ আজ ভোটাধিকার, মানবাধিকারসহ সংবিধান স্বীকৃত সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশবাসী তাদের সব ধরনের অধিকার ফিরে পেতে বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। বর্তমানে আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যেই আছি। আর আন্দোলন-সংগ্রাম সফল করতে হলে তরুণ-যুবকদের বিকল্প নেই। জন্য আমরা তরুণ ও যুবসমাজকে সংগঠিত করছি। যারা দীর্ঘদিন দলের বাইরে রয়েছেন তাদের দলে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
জানা যায়, ২৫ জানুয়ারি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন নব্বই দশকের ছাত্রনেতা বেনজীর আহমেদ টিটো। দীর্ঘ ২০ বছর পর তাকে গুরুত্ব দিল দলটি। এরআগে ছাত্রদলের সাবেক শতাধিক নেতাকেও দলের নির্বাহী কমিটিতে পদ দেওয়া হয়।
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে খুলনা বিভাগের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক থেকে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। এছাড়া সম্প্রতি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুলকে। এরআগে ছাত্রদলের সাবেক নেতা আব্দুল খালেককে রংপুর এবং ওবায়দুর রহমান চন্দনকে রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যারা রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে বলিষ্ঠ ও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন, তাদের নেতৃত্বের সামনের সারিতে নিয়ে আসার দায়িত্ব আমাদের সিনিয়রদের। সেইসঙ্গে অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা সফলতা দেখিয়েছেন, কিন্তু দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই তাদেরও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি শিগগিরই : এদিকে বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করা হচ্ছে। শিগগিরই এই দুই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি দেওয়া হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর ১১৪ সদস্যের আবার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সূত্র জানায়, এবার আহ্বায়ক কমিটি না দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার পক্ষে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। এ কমিটিতে সাবেক ছাত্রনেতাদের প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে। যুবদলের পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সভাপতি পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নু, মোনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জাকির হোসেন সিদ্দিকী, জাকির হোসেন মুন্না ও মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু।
সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন-বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান। সংগঠনের বাইরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন-সাবেক ছাত্রনেতা রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ইসহাক সরকার প্রমুখ।
এদিকে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রয়াত শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মেয়াদ শেষের এক বছর পর ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ১৪৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী বাবু মৃত্যুবরণ করলে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলে পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন-বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, সহসভাপতি আনু মোহাম্মদ শামীম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।
সাধারণ সম্পাদকের পদে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী, সহসাধারণ সম্পাদক সর্দার মো. নুরুজ্জামান, সহদপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান। এর বাইরে ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ আলোচনায় আছেন।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: হারুন মিয়া
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest