চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে হলের ১৫ কক্ষ ভাঙচুর, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২

চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে হলের ১৫ কক্ষ ভাঙচুর, তদন্ত কমিটি গঠন

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবাসিক হলের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্য দপ্তরের সিনেট কক্ষে এক জরুরি সভায় এ কমিটি করা হয়। সভায় উপাচার্য শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম মনিরুল হাসান ও প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক আবুল মনছুরকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন পরিচালক ড. জারিন আক্তার, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট ড. তড়িৎ কুমার বল, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী ও সহকারী প্রক্টর এসএ এম জিয়াউল ইসলাম। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে নিজেদের কর্মীকে র‌্যাগ দেওয়ার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের উপ-পক্ষ ‘সিক্সটি নাইন’ পক্ষের অন্তত ৩০ জন নেতা কর্মী মাস্টারদা সূর্যসেন হলে থাকা আরেক উপপক্ষ এপিটাপ নেতা কর্মীদের ওপর হমলা করে। এ সময় উভয় উপ-পক্ষের কর্মীরা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাথর নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন কর্মী আহত হন।

এপিটাফ উপ-পক্ষের নেতা ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাজ্জাদ আনাম পিনন সমকালকে বলেন, ‘রাতে সন্ত্রাসীরা আমাদের হলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা নিজেদের ছাত্রলীগ দাবি করে। তবে আমি তাদেরকে সন্ত্রাসী বলব। হামলায় আমাদের হলের নীরিহ শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। পাশাপাশি হলের ১২টি কক্ষ ভাঙচুর করে তিনটি ল্যাপটপ, একটি স্মার্টফোন ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এ ছাড়া বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কক্ষসহ তিনটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আমরা প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব।

এদিকে ছাত্রলীগের ভাঙচুরের ঘটনায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ তড়িৎ কুমার বল। তিনি বলেন, রাতে ছাত্রলীগের একাংশ হামলা চালিয়েছে হলে। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

জানতে চাইলে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। যেই দোষ করে থাকুক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছাত্রলীগের ভাঙচুরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন:

ইনস্টিটিউট ও আবাসিক হল ভাঙচুরের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরিবেশ ও বনবিদ্যা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধেনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সন্ত্রাসী কায়দায় নীরিহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। হল ও ইনস্টিটিউট ভাঙচুর কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। যারা এটি করেছে তারা সন্ত্রাসী। আমরা এ ঘটনার দষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য বেণু কুমার দে ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। তাদের সামনে শিক্ষার্থীরা ঘটনার বিচারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে উপ-উপাচার্যের আশ্বাসে তারা অবস্থান ত্যাগ করেন।

উপ-উপাচার্য বেণু কুমার দে বলেন, ভাঙচুরের ঘটনা নিন্দনীয়। দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ