রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহ্বান বিএনপির

প্রকাশিত: ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২

রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহ্বান বিএনপির

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ 

সব ভেদাভেদ ভুলে সরকার পতনের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার হটাতে হবে। গতকাল শনিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার প্রথম থেকেই টিকা নিয়ে দুর্নীতি করছে। এমন কোন জায়গা নেই যে এ সরকার লুটপাট করছে না। আওয়ামী লীগ লুটেরা দলে পরিণত হয়েছে। লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তারা।

তিনি বলেন, সবাইকে গণপেনশন দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। এটার মাধ্যমে আরেকটি লুটপাটের ব্যবস্থা করছে সরকার। মানুষ আওয়ামী লীগকে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু মনে করছে। সরকার নিজে এবং সব প্রশাসন যন্ত্রকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে ফেলেছে। কুইক রেন্টাল প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এদের জন্য আবার সংসদে দায়মুক্তি আইন করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনো সময় আছে খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করুন। তাহলেই কেবলমাত্র এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।

করোনার বিধিনিষেধের কারণে এক মাসেরও বেশি সময় বিরতির পর গতকাল প্রথম সমাবেশ করলো বিএনপি। বেলা দুইটায় সমাবেশ শুরু হলেও এর কয়েক ঘন্টা আগে থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে দলটির নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেস ক্লাব এলাকায় জন সমুদ্রে পরিণত হয়। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকে মৎস ভবন মোড়, সেগুনবাগিচা, সচিবালয় এলাকা, জিরো পয়েন্ট ও প্রেস ক্লাব এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পথচারীদের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। সমাবেশের জন্য প্রেস ক্লাবের সামনে মিনি ট্রাকের ওপর তৈরী করা অস্থায়ী মঞ্চ। আর রাস্তায় কর্মীদের বসার জন্য বিছিয়ে দেয়া হয় মাদুর।

সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। গরীব আরো গরীব হচ্ছে। সরকারের সিন্ডিকেটের জন্য সব কিছুর দাম বাড়ছে। এরা দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিলো। ২০০৬ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ে তখন মোটা চাল ১৬ টাকা ছিলো আর এখন ৫০টাকা। কোথায় ১০টাকা চাল?

তিনি বলেন, এদের বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন আন্দোলন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সব কিছুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কিন্তু মানুষের জীবনের মূল্য নেই। দুর্নীতির টাকা দিয়ে কানাডার বেগম পাড়ায় বাড়ি বানাচ্ছে সরকারের লোকেরা। যারা পকেট কেটে টাকা পাচার করছেন এর বিচার হবে একদিন।

স্থাযী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির সঙ্গে ভোট চুরির সম্পর্ক আছে। দুর্নীতির সঙ্গে ভোট চুরির সম্পর্ক আছে। মেগা প্রকল্পের সঙ্গেও ভোট চুরির সম্পর্ক আছে। কারণ সবখান থেকেই টাকা পাচার করা হচ্ছে। এখন ভোট চোরদের ধরতে হবে। তাদের সহযোগীদের ধরতে হবে। যারা আজকে ভোট চুরি করছে তাদের ধরতে হবে। ভোট চোরদের ধরে চুরির মেশিন বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আজকে সময় এসেছে, আমাদের টাকা দিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে দেবো না। রাজপথে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশকে রক্ষা করবো। আর এতে বিএনপি নেতৃত্ব দেবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন প্রমুখ।#

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ