সিলেট বিএনপিতে শেষ সময়ে নতুন সমীকরণ

প্রকাশিত: ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২

সিলেট বিএনপিতে শেষ সময়ে নতুন সমীকরণ

ইউএস বাংলা বার্তা সিলেট ডেস্কঃ 

সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়ে তোড়জোড় চলছে সিলেট জেলা বিএনপিতে। জেলা আওতাধীন ১৮টি ইউনিটের মধ্যে ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ১৪টি ইউনিটের কাউন্সিল ও কমিটি গঠন। চলতি মাসের মধ্যে বাকি ইউনিটের কাউন্সিলর শেষ করে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই জেলার কাউন্সিলর করতে চান বর্তমান আহŸায়ক কমিটির নেতারা। কমিটির শীর্ষ পাঁচ পদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে। কাউন্সিলকে সামনে রেখে পদপ্রত্যাশীদেরও দৌঁড়ঝাঁপ চলছে সমানতালে। কিন্তু কাউন্সিলের প্রস্তুতির শেষ সময়ে এসে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চান তিনি। এমন খবরে জেলা বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে চলছে নতুন করে হিসেব নিকেষ। শেষ সময়ে আরিফের প্রার্থী হওয়াকে অনেকেই চমক হিসেবেই দেখছেন।

২০১৯ সালের ২ অক্টোবর সিলেট জেলা বিএনপির মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটি ভেঙ্গে কেন্দ্র থেকে ঘোষনা করা হয় আহŸায়ক কমিটি। কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে গঠিত আহŸায়ক কমিটিকে সকল উপজেলা কমিটি করে তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে গেলো সোয়া দুই বছরেও সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে কেন্দ্রের চাপ ও করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় চলছে সম্মেলনের তোড়জোড়।

দলীয় সূত্র জানায়, জেলা আওতাধীন ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌর শাখার মধ্যে ইতোমধ্যে ৯টি উপজেলা ও সবকটি পৌর শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিলে শীর্ষ পদে প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। উপজেলাগুলোর মধ্যে কাউন্সিলের বাকি রয়েছে ওসমানীনগর, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ  ও বালাগঞ্জ। আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে এই পাঁচ উপজেলারও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর মার্চের প্রথম সপ্তাহেই জেলার কাউন্সিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দায়িত্বশীলরা।

এতোদিন পর্যন্ত জেলা বিএনপির সভাপতি পদে সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রিয় সহ সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহŸায়ক আবদুর রাজ্জাক এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ ও আবদুল আহাদ খান জামাল, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এমএ মান্নান ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রিয় নেতা কামরুল হাসান শাহীন প্রার্থী ছিলেন। নবগঠিত ইউনিটগুলোর কাউন্সিলরদের সাথে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন। কাউন্সিলরদের নিজেদের পক্ষে রাখতে বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে আসছেন তারা। কিন্তু শেষ সময়ে এসে সভাপতি পদে নতুন সমীকরণ তৈরি করে দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রিয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। এতোদিন মহানগর বিএনপির রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকা আরিফুল হক চৌধুরী এবার প্রার্থী হতে চান জেলা বিএনপির সভাপতি পদে। শেষ সময়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রার্থী হওয়াকে দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা চমক হিসেবেই দেখছেন। সিলেটের রাজনীতিতে ক্যারিশমেটিক নেতা হিসেবে পরিচিতি আরিফ শেষ পর্যন্ত কি চমক দেখান সেটার দেখার অপেক্ষায় নেতাকর্মীরা।

প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আরিফুল হক চৌধুরী অবশ্য এখনো পুরোপুরি মুখ খুলতে নারাজ। বলছেন, নেতাকর্মীরাই তাদের নেতৃত্ব বাছাই করবে। দলের প্রয়োজনেই তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে সূত্র জানিয়েছে, কাউন্সিলের পর বিভিন্ন উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্তরা মেয়র আরিফের সাথে যোগাযোগ করায় তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী হয়েছেন।
কাউন্সিলের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির প্রথম সদস্য আবুল কাহের শামীম বলেন, ২৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে অবশিষ্ট সকল ইউনিটে কাউন্সিল সম্পন্ন হবে। এরপর কেন্দ্র থেকে জেলার সম্মেলন ও কাউন্সিলের তারিখ চাওয়া হবে। আশাকরা যাচ্ছে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই কাউন্সিল হবে। নিজের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে আবুল কাহের শামীম বলেন, সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য নেতাকর্মীদের  প্রচন্ড চাপ আছে। নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিতের আন্দোলন জোরদার করতে তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পুণরায় নিতে আগ্রহী।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ