বিএনপিকে ৯৩ সিটে ৩৭২০ কোটি টাকার অফার

প্রকাশিত: ৩:২৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২২

বিএনপিকে ৯৩ সিটে ৩৭২০ কোটি টাকার অফার

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ 

 বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিশাল প্যাকেজ ঘুরছে। বাজেট বিশাল। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে আয়োজনও ব্যাপক। খেলাটি পুরোনো। তবে এবার ইভেন্ট বেড়েছে। খেলোয়াড় পাল্টেছে। খেলা ম্যাচে গড়ানোর নিশ্চয়তা মেলেনি এখনো। তবে খরচপাতি চলছে উদার হস্তে। ওই খেলারই সামান্য পার্ট ছিল নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিতে বিএনপির দীর্ঘদিনের জোট শরিক এনপিপির ভগ্নাংশকে দিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল ও সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিবের নাম প্রস্তাব করানো। তাদের একজনকে করা হয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, আরেকজনকে নির্বাচন কমিশনার। তবে ক্ষমতাসীন দল থেকে জোরের সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নামের প্রস্তাবক ছিলেন ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী।
সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়নি। এর পরও তারা এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে ভয় পান না। রাজনৈতিক এ চাতুরী করা হয়েছে আগেরবারও। গোয়েন্দা সংস্থার মেকানিজমে সামান্য খরচে বিভিন্ন খুচরা দলকে দিয়ে এ ধরনের প্রস্তাবনার কৌশলটি পুরোনো। আগেরবার তরীকত ফেডারেশনকে দিয়ে করানো হয়েছিল কে এম নুরুল হুদার নাম। নিরপেক্ষতার আশ্বাসের সঙ্গে নয়া সিইসি হাবিবুল আউয়াল বিএনপিকে নির্ভয়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দায়িত্ব নেওয়ার দিনই। আগের দুই সিইসি কাজী রকিব ও নুরুল হুদার মতো তিনিও বলছেন, সবাইকে নির্বাচনে আনার চ্যালেঞ্জের কথা। সিইসি নতুন হলেও কথা পুরোনোই। আয়োজনও পুরোনো। নতুনত্ব আয়োজক আর ফান্ডিং-বন্ডিংয়ে।
এবারও বন্ডিংয়ে বিদেশি বিশেষ বিশেষ মহল ও ব্যক্তিকেও রাখা হচ্ছে। যার মধ্য দিয়ে পুরোনো খেলাটিকে নতুন আবহ দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠছে সরকার। বিএনপিকে ৯৩টি সিট দিয়ে মর্যাদাবান বিরোধী দলে রাখার টোপ গেলানোর চেষ্টা সফলের আশাবাদও এ কারণেই। ওই ৯৩ সিটে জিতে আসার ব্যাংক চেকের পাশাপাশি ৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকার অফারও দিয়ে রাখা হয়েছে। আসনপ্রতি ৪০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে দেওয়া হবে, নাকি দলের শীর্ষ বিশেষ নেতৃত্বের কাছে দেওয়া হবে- আগ বাড়িয়ে এ-সংক্রান্ত কথাবার্তাও গেলানোর চেষ্টা হচ্ছে। সরকার চায় বিএনপি এখনই ব্যস্ত হয়ে পড়ুক নির্বাচনী তৎপরতায়। টাকার ভাগের জন্য উদ্্গ্রীব হয়ে যাক দলটির বিশেষ বিশেষ নেতাকর্মীরা।
এদিকে ১৪ সালের নির্বাচনে যাওয়া এবং ১৮ সালের নির্বাচনে না যাওয়ার লাভ-ক্ষতি কষে বিএনপির রোডম্যাপও সরকারের জন্য বেশ উদ্বেগের। সরকার যত ছকই করুক, এবার আর আগের মতো দিন বা রাতের একতরফা ক্রিয়া সাঙ্গ করতে পারবে না- এমন বার্তা স্পষ্ট। প্রতিরোধের আয়োজকদের প্রস্তুতির খবর জানে সরকার। তা বানচালের অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন যেকোনোভাবে, যেকোনো মূল্যে, বেশি আসনের ওয়াদা দিয়ে হলেও বিএনপিকে ফিল্ডে আনা। পরে বিএনপি সরে গেলেও সমস্যা হবে না। ততক্ষণে সরকার উতরে যাবে। চোখ বুজে আবার ক্ষমতায় আসবে। সরকারের এই সুপার গেমের স্লট বিএনপির হাইকমান্ডেরও জানা। লন্ডন নির্বাসিত তারেক রহমানের কাছে এ-সংক্রান্ত তথ্য আরো বেশি। কিন্তু কোনো নির্দেশনা দিচ্ছেন না তিনি। কেবল পর্যবেক্ষণ করছেন। নেতাদের কাছে তার বার্তার সারসংক্ষেপ হচ্ছে, ইসি নিয়ে কোনো আলোচনায়ই না যেতে। ফোনালাপ বন্ধ রাখতে।
তারেকের বার্তা ও মোটিভ বুঝে দল থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই বিএনপির। সাবধানী মনোভাবের অংশ হিসেবে বিএনপির নেতারা ফোনে কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছেন। এর কিছুটা ফলও মিলছে। টানা গত কয়েক মাস যাবৎ বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতার ফোন ফাঁসের ঘটনা না থাকার পেছনে অন্যতম কারণ এটি। বুঝে-শুনে এবং আগপিছ ভেবেই বিএনপির এমন অবস্থান। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিনা ভোটে ১৫৪ এমপির জয়, ১৮ সালে আগের রাতেই ভোটরঙ্গের আলোকেই এই অবস্থান দলটির। এবার তাই বর্জনে বর্জনে শেষতক বড় অর্জনের দিশা মেলার আশা। ১৪ বা ১৮ সালের মতো নির্বাচন এবার হবে না বা হতে দেওয়া হবে না-এমন গ্যারান্টিও পাচ্ছে বিভিন্ন কর্নার থেকে।

সুত্রঃঠিকানা

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ