প্রকাশিত: ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২২
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ
পরিস্থিতি ও বাস্তবতার নিরিখে’ তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন বলে জানালেন বিতর্ক সৃষ্টিকারী ডা. মুরাদ হাসান। তার দাবি, নানা সময় বিভিন্ন বিষয় তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন।
সম্প্রতি জামালপুরে স্থানীয় একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকার দেন ডা. মুরাদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়েছে।
নানা সময়ে রাজনীতির ভেতর-বাইরের বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে। মাঝে বিএনপি চেয়ারপারসন ও তার পরিবারের নারী সদস্যদের নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেয়া নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ওই বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁস হয় ডা. মুরাদের। এরপরই বেকায়দায় পড়ে যান তিনি।
মুরাদের অরুচিকর ও অশালীন কর্মকাণ্ডে চটে যান খোদ প্রধানমন্ত্রী। নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে। এরপরই শুরু হয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা। অব্যাহতি দেয়া হয় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদকের পদ থেকে। একে একে উপজেলা, ইউনিয়নের পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।
গত ডিসেম্বর থেকে এই রাজনীতিকের ওপর দিয়ে ‘হঠাৎ ঝড়’ বয়ে যাওয়া শুরু করলে কখনো আত্মগোপনে, কখনো ক্ষণিকের জন্য প্রকাশ্যে এসেছেন। তবে মুখ অনেকটাই বন্ধ ছিল। মাঝে নিজ জেলা জামালপুরের একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতার জানাজায় তাকে দেখা গেছে।
প্রায় অন্তরারালে থাকরেও তাকে মুরাদকে নিয়ে রহস্য থেকেই গিয়েছিল দেশবাসীর। কোন পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করতে হয়েছিল তাকে এটা অজানা নয় কারো। এর পরও নিজের পক্ষ থেকে কিছু কথা থেকেই যায়।
নীরবতা ভেঙে অবশেষে দেশের রাজনীতি, নিজের প্রতিমন্ত্রী পদ হারানো, আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন মুরাদ হাসান। যাতে তার পদত্যাগের কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এসব কারণ আসল নাকি আসল নয়- সে বিচার পাঠকের। তবে নিজের বয়ান হিসেবে এটা ‘আসল’ কারণ বলেই দাবি করতে পারেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।
সাক্ষাতকারে যা বললেন ডা. মুরাদ:
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ডা. মুরাদ বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আল্লাহ যখন যে অবস্থায় রাখেন সেটা শুকুর আলহামদুলিল্লাহ। আমার নির্বাচনী এলাকার সবাই আমাকে ভালোবাসে এটাই আমার বিশ্বাস। এই বিশ্বাস নিয়েই আমি রাজনীতি করি। এই বিশ্বাস যদি আমার হারিয়ে যায় কখনও, তাহলে আমি আর রাজনীতি করব না বা করতে পারব না। আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান তালুকদারকেও সারাজীবন দেখেছি মানুষকে শুধু উপকার করতে। কোনদিন কারো কাছ থেকে উপকার নেবে- এই চিন্তা কখনো করতে দেখিনি। একইভাবে আমি সবসময় ভাবি, আমি ডাক্তার। চিকিৎসক হিসেবে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া থেকে শুরু করে সকল মানুষকে আমার যা কিছু সামর্থ্য আছে তা দিয়ে সহযোগিতা করা- এটাই আমার রাজনীতি। আমি রাজনীতি বলতে মানুষের উপকার করাকেই বুঝি। রাজনীতি বলতে আমার কাছে আর কোনো আলাদা সংজ্ঞা নেই।’
মুরাদ হাসান বলেন, ‘রাজনীতির সংজ্ঞা হচ্ছে যে মানুষের উপকার করতে পারবে, মানুষের জন্য কাজ করতে পারবে নিজের ক্ষতি করে অন্যের উপকার করতে পারবে তাদেরই রাজনীতি করা উচিত। তা না হলে রাজনীতি করার প্রয়োজন নেই। রাজনীতির আলাদা কোনো অর্থ নেই। কর্মী নেতা- সে যেই হোক না কেন দলের জন্য সে কতটুকু নিবেদিত প্রাণ সেটা হচ্ছে দরকারি।’
প্রতিমন্ত্রীর পদ ফিরে পাওয়া নিয়ে নেতাকর্মীদের চাওয়া আছে- এমন প্রশ্নে মুরাদ হাসান বলেন, ‘আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আমাদের এলাকার মানুষ আমাকে আবারও এমপি হিসেবে দেখতে চায় এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দেখতে চায়। আমি আসলে প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত না। এটা পরিস্কার কথা। কারণ আমি প্রতিমন্ত্রী তো সবসময় ছিলাম না। আমি ২০০৮ সালে যখন নির্বাচিত হয়েছি তখন থেকে পাঁচ বছর আমি এমপি ছিলাম। প্রতিমন্ত্রী তো ছিলাম না। পরে আবার এমপি হয়েছি। এবার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৮ সালে এমপি হওয়ার পরে আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তী সময়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী।’
নিজের পদত্যাগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি পরিস্থিতি এবং বাস্তবতার নিরিখে পদত্যাগ করেছি প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে। বিভিন্ন বিষয় আমার সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে হয়েছে। যার কারণে আমি সেই পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন দিয়েছিলাম। সেটা গ্র্যান্টেড হয়েছে। এখন মূল কথাটা হলো যে আবার জনগণ চায়। আমি কোনো সমস্যা দেখি না। চাইতেই পারে। তবে আমি আবার প্রতিমন্ত্রী হবো কি হবো না এটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছা এবং প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা।’
নিজের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মুরাদ হাসান বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো কাজ করা। মানুষের জন্য কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জন্য কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর চেতনা, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের যা কিছু আছে, আমাদের দলের জন্য কাজ করা, মানুষের পাশে থাকা। এলাকার উন্নয়ন করা। ডাক্তার হিসেবে সেবা দান করা। এগুলোই আমার কাজ।’
আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে মুরাদ হাসান বলেন, ‘আমার আসনের সাধারণ মানুষ আমাকে চাইবে এর নিশ্চয়ই কোনো যৌক্তিক কারণ আছে। আমার যদি সেই যোগ্যতা থেকে থাকে, আমাকে যদি তারা যোগ্য মনে করে, ভালোবাসে, আমাকে যদি তারা বিশ্বাস করে এবং আল্লাহতায়ালা যদি আমার তাকদিরে লিখে থাকেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মা উনি যদি আমাকে মনোনয়ন দেন নিশ্চয়ই আমি নির্বাচন করব।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: হারুন মিয়া
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest