সিলেট বিএনপিতে আলোচনায় মেয়র আরিফ

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২২

সিলেট বিএনপিতে আলোচনায় মেয়র আরিফ

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ

সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল আগামীকাল। কাউন্সিল ও সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কাউন্সিলকে ঘিরে মাঠে তৎপর পদপ্রত্যাশীরা। তারা ছুটছেন কাউন্সিলরদের কাছে। অনেকে যাচ্ছেন পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ের কাউন্সিলরদের বাড়ি বাড়ি। সভাপতি পদের তিন প্রতিদ্বন্দ্বীই প্রয়াত মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান বলয়ের। শনিবার তারা ছিলেন কানাইঘাট উপজেলায়।

সেখানে কাউন্সিলরদের সঙ্গে পৃথক মতবিনিময় করেন তারা। এবারের কাউন্সিলে হঠাৎ আলোচনায় এসেছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি প্রার্থী হওয়ায় দলের অনেকেরই আঁতে ঘা। এ নিয়ে সিলেট বিএনপির নেতাদের মুখে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে তাকে সরকারের এজেন্ট বলেও অভিযোগ করেছেন।

সিলেট জেলা বিএনপির অধীনে ১৮টি ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভা। কাউন্সিলর ১ হাজার ৮১৮ জন। সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। এর মধ্যে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ছাড়া বাকি দুই প্রার্থীই কেন্দ্রীয় সদস্য।

মেয়র আরিফের বিরোধীরা বলছেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিএনপির সভাপতি হওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি। গাড়িতে ফ্লাগ লাগিয়ে, সঙ্গে বাহিনী নিয়ে তিনি যখন যা খুশি করে যাচ্ছেন।

বিএনপির জেলা আহ্বায়ক কমিটি ও কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন, ‘আমি মাঠে আছি, মাঠেই থাকব। হাঁকডাক এক জিনিস আর গোপন ব্যালট আরেক জিনিস। নির্বাচনের জন্য ব্যালটের প্রয়োজন। আমি ব্যালট বিপ্লবের অপেক্ষায় আছি।’ তিনি শনিবার জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য, সভাপতি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সরকারের এজেন্ট হলে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যা ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হতো না। যারা অপবাদ রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ভোট নেওয়ার ফন্দি করছেন, তাদের শরীরে জিয়ার আদর্শের রক্ত নেই। আমার শরীরে শহিদ জিয়ার আদর্শের জাতীয়তাবাদী রক্ত। তাই শত ঝুঁকির আশঙ্কা মাথায় নিয়ে সিলেট বিএনপির দায়িত্ব নিতে চাইছি। তিনি বলেন, পতাকা জনগণের দেওয়া, সরকারের নয়।

অপর সভাপতি প্রার্থী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, প্রতিটি উপজেলায় দুবার করে মতবিনিময় করে বেশ সাড়া পেয়েছি। সিলেটে বিএনপির নিজস্ব কোনো কার্যালয় নেই। ফলে দলের রাজনীতি অনেকটা নেতাদের ড্রয়িংরুমে বন্দি। এই অবস্থার অবসানে সিলেট শহরে নিজস্ব অফিস করে দিতে চাই বিএনপির। এছাড়াও জেলায় বিএনপির ওয়েবসাইটসহ আরও অনেক কিছুই করবেন বলে জানান তিনি। এই তিন সভাপতি প্রার্থীই শনিবার কানাইঘাটে ছিলেন। আরিফুল হক চৌধুরী ও আবুল কাহের শামীম বিকালে এবং আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী রাতে কানাইঘাটের কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এদিকে কাউন্সিলের প্রার্থীদের নিয়ে অনেকটা বিপাকে নেতাকর্মীরা। সব প্রার্থীই চান প্রার্থীর সঙ্গে নেতাদের রাখতে। কিন্তু তাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চক্ষুশূল হতে হচ্ছে তাদের। নেতাকর্মীদের নিয়ে এমন টানাহ্যাঁচড়ায় দলের অভ্যন্তরে মেরুকরণ ঘটছে প্রতিদিন।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, আমার সাংগঠনিক তৎপরতা সম্পর্কে সবাই অবগত। যেখানেই যাচ্ছি ভালো সাড়া পাচ্ছি। ভোটের বিষয়টি কাউন্সিলরদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

এ পদের অপর প্রার্থী এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ছাত্ররাজনীতি থেকে এ পর্যন্ত আমার সব সাংগঠনিক কাজ নখদর্পণে। আমার বিশ্বাস, নিশ্চয়ই সংগঠনের স্বার্থে আমাকে বিবেচনা করবেন কাউন্সিলররা। সাধারণ সম্পাদক পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন আব্দুল আহাদ খান জামাল, মো. আব্দুল মান্নান, কামরুল হাসান চৌধুরী শাহীন এবং আ ফ ম কামাল। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন মো. লোকমান আহমদ, এম মুজিবুর রহমান মুজিব, শাকিল মোর্শেদ ও মো. শামীম আহমদ।

এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক যুগান্তরকে বলেন, আগামী দিনের কঠিন দিনগুলো মোকাবিলা করার জন্য অবশ্যই দক্ষ, অভিজ্ঞ নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। কারণ আগামী দিনগুলো কঠোর আন্দোলন সংগ্রামের।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ