প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২২
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ
বৃক্ষরাজি মহান আল্লাহর এমন সৃষ্টি, যারা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এক স্থানে দাঁড়িয়েই মহান আল্লাহর তাসবিহ জপে। তারা নিজেরা নিজেদের শক্তিতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে না। হ্যাঁ, মহান আল্লাহ এমন কিছু বৃক্ষ দুনিয়াতে রেখেছেন, যেগুলো খুব অল্প পরিমাণে নিজের স্থান পরিবর্তন করতে পারে। তবে দুর্লভ এই গাছ, পৃথিবীর নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়।
যেমন লাতিন আমেরিকায় এক ধরনের পাম ট্রি আছে, যাকে ‘ওয়াকিং পাম’ বলে। যেগুলো হেঁটে বেড়ায়। এ গাছগুলো সূর্যের আলো পাওয়ার জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে পারে। তবে হুট করে অনেক দূরত্ব অতিক্রম করে না। প্রতিদিন দুই-তিন সেন্টিমিটার স্থান পরিবর্তন করা এই গাছ বছরে সর্বোচ্চ ২০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। সুবহানাল্লাহ!
আজ আমরা জানব এমন কিছু ঘটনা, যেগুলোতে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশ পালনে গাছ নিজের স্থান থেকে সরে মহানবী (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়েছিল।
বিশ্বনবী (সা.) ছিলেন, রহমাতাল্লিল আলামিন। তাঁর সম্মানে বৃক্ষরাজি পর্যন্ত নিজের স্থান থেকে সরে তাঁর কাছে ছুটে এসেছিল। এটি ছিল তাঁর অন্যতম মুজিজা। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন জিবরাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এলেন। জনৈক মক্কাবাসী তাঁকে আঘাত করায় তিনি রক্তরঞ্জিত ছিলেন। জিবরাইল (আ.) বলেন, আপনার কী হয়েছে? তিনি বলেন, এই দুর্বৃত্তরা আমার সঙ্গে এই আচরণ করেছে। জিবরাইল (আ.) বলেন, আপনি চাইলে আমি আপনাকে একটি নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনি বলেন, হ্যাঁ, দেখান। অতঃপর তিনি প্রান্তরের অপর পাশে একটি গাছের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলেন, আপনি গাছটিকে ডাকুন। তিনি গাছটিকে ডাক দিলেন। সেটি তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল। জিবরাইল (আ.) বলেন, একে নিজ স্থানে ফিরে যেতে বলুন। তিনি গাছটিকে ফিরে যেতে বললে তা নিজ স্থানে ফিরে গেল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২৮)
নবীজি (সা.)-এর সত্য নবী হওয়া প্রমান করতে
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক বেদুইন এসে বলল, আমি কিভাবে অবগত হব যে আপনি নবী? তিনি বলেন, ওই খেজুরগাছের একটি কাঁদিকে আমি ডাকলে (তা যদি নেমে আসে) তাহলে তুমি কি সাক্ষ্য দেবে যে আমি আল্লাহ তাআলার রাসুল? রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ডাকলেন, সে সময় কাঁদি খেজুরগাছ থেকে নেমে নবী (সা.)-এর সম্মুখে এসে গেল। তারপর তিনি বলেন, এবার প্রত্যাবর্তন করো এবং তা নিজ স্থানে ফিরে গেল। সে সময় বেদুইনটি ইসলাম গ্রহণ করল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬২৮)
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে পুনরায় আমরা পথ অতিক্রম করতে লাগলাম। এমন সময় আমরা এক প্রশস্ত উপত্যকায় অবস্থান নিলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) শৌচকার্যের জন্য গমন করলেন, আমিও পানির পাত্র নিয়ে তাঁর পশ্চাদ্ধাবন করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) দৃষ্টিপাত করলেন; কিন্তু আড়াল করার মতো কিছুই পেলেন না। হঠাৎ পাহাড়ের এক প্রান্তে দুটি গাছ দেখতে পেলেন। তাই তিনি এর একটির সন্নিকটে গেলেন এবং এর একটি ডাল ধরে বললেন, আল্লাহর আদেশে তুমি আমার অনুগত হয়ে যাও। তখন ডালটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য স্বীকার (ঝুঁকে পড়ল) করে নিল, লাগাম পরিহিত ওই উটের মতো, যা তার চালকের অনুসরণ করে। তারপর তিনি দ্বিতীয় গাছটির কাছে এসে এর একটি ডাল ধরে বললেন, আল্লাহর হুকুমে তুমি আমার অনুগত হয়ে যাও। এটিও অনুরূপ তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে নিল। অতঃপর তিনি যখন উভয় বৃক্ষের মাঝখানে পৌঁছলেন, তখন তিনি ডাল দুটি একসঙ্গে মিলিয়ে বললেন, আল্লাহর হুকুমে তোমরা আমার সম্মুখে সমবেত হয়ে যাও, মিলে যাও। তারা উভয়েই মিলে গেল। জাবির (রা.) বলেন, অতঃপর আমি এ ভয়ে দৌড়ে চলে এলাম যে না জানি রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার সন্নিকটে হওয়ার বিষয়টি জেনে ফেলেন এবং আরো দূরে চলে যান। অতঃপর আমি বসে মনে মনে কিছু বলছিলাম। এ অবস্থায় দৃষ্টি উঠিয়েই আমি দেখলাম যে রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্মুখ দিক থেকে এগিয়ে আসছেন। উভয় বৃক্ষই তখন পৃথক হয়ে প্রত্যেকটি স্বীয় কাণ্ডের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল। …’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৪০৮)।
সুবহানাল্লাহ, জিন ও মানুষ পরীক্ষার্থী মাত্র, তাই তাদের অনেকেই মহানবী (সা.)-এর মতো রহমাতাল্লিল আলামিনকে চিনতে পারেনি। কিন্তু মহান আল্লাহর অন্যান্য মাখলুক আল্লাহর হুকুমে তাদের নবীজি (সা.)-কে ঠিকই চিনে নিত।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: হারুন মিয়া
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest